বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৭ অপরাহ্ন
স্মৃতির পাতায় সেই তুমি ( ছোট গল্প)
নজরুল বাঙালী
হৃদয়ের গহীনে এক টুকরো ভালোলাগার নাম অধোরা নিজুম শীতের কোনএক বিকেলে তোর সাথে ক্ষনিকের পরিচর আর সেই থেকে তোর সাথে বন্ধুত্ব,মাঝে মাঝে তোর সাথে কথা হতো গান শুনাতি আর দুষ্টুমিতে সময় চলে যেতো সকাল থেকে মধ্যরাত, কখনো বুজতে পারতামনা এত তাড়া তাড়ি সময় গুলো যায় কি করে।এর পর আমাদের মাঝে অনেক দিন কথা হয়নি কারন আমি লিখা লিখি নিয়ে খুব ব্যস্ত সামনে একুশে বইমেলা আমি যেন তাড়া তাড়ি লিখাটি শেষ করতে পারি, এই দিকে আমার অফিসের কাজের চাপ বেড়ে গেলো কোন কিছুতে সময় মত কোন কাজ শেষ করতে পারছিলাম না মনটা খারাপ তাই ঘরের বেলকোনি বসে একান্ত মনে ভাবছি সেই ফেলে আসা পুরোদিনে কিছু স্মৃতির কথা। সেদিন বাহিরে মুসল ধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো খোলা বেলকোনি তে বসে বৃষ্টির রিমঝিম চন্দ আর বৃষ্টি ভেজা শীতল বাতাস উপভোগ করছিলাম।এমন সময় আমার মোবাইলে রিং হচ্ছিলো কেন জানি ফেোনটা ধরতে খুব বিরক্ত বোধ হচ্ছিলো। কয়েক বার ফোনটা বাজার পর ফোনটা ধরলাম তখনি শুরু হলো অপর প্রান্ত থেকে মান অভিমানে ঝারি।এক নাগারে চলছিল তোর বকা বকি গুলো।আমি কথা বলার কোন সুয়োগ পাচ্ছিলাম না তার পর আরো কিছুক্ষন চেছা মেছি কিছুটা কান্না কাটি কিছুটা অভিমান করে হটাৎ করে ফোনটা তুই রেখে দিলি।আমি আর পের ফোন টা পুনরায় করলাম না। কারন এমনি তে তুই খুব রেগে আছিস হয়তো ফোনটা তুই ধরবিনা বা ধরলেও আরো কিছু বকা বকি শুনতে হবে সে জন্য হয়তো আমি প্রস্তুুত ছিলামনা বলেই ফোন টা আর তখন ধরা হলোনা। সিদ্বান্ত নিয়েছি আরো কিছুটা সময়ের পর রাতে ফোন করবো। কাজ সেরে বাসায় যখন এলাম ঘরে ঢুকতে ভাবি বললো আজ এত দেরি করে ফিরলে যে। ঐ দিকে অধরা এসে অনেক ক্ষন বসে আছে। তেমন কারো সাথে কথাবার্তা বলছে না মুখ ঘোমরা করে বসে আছে চা নাস্তা দিলাম কিছুই মুখে দিচ্ছে না তোর সাথে কিছু কি হয়েছে ? তখন আমি বললাম ভাবি ওর সাথে আমার কিছু হয়নি তবে সে আজ কদিন অকারণে আমার উপর খুব রেগে আছে ।পরে ভাবিকে জিজ্ঞেস করলাম সে কোথায় ভাবি বললো পিছনের বেলকোনিতে বসে আছে। আমি তখন হাত মুখ ধুয়ে হাতে টাওয়াল নিয়ে পিছনের বেলকোনিতে দিকে এগুতে থাকলাম।এই দিকে ভাবি টেবিলে চা নাস্তা দিয়ে রেখেছে। তখনো দেখছি অধরা আনমনা হয়ে দুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আকাশে প্রানে। আমি তার পিছন দিয়ে তার কাঁধে হাত রাখা মাত্রই হটাৎ চমকে উঠে আমার দিকে তাকিয়ে আমার চোখে চোখ পড়া মাত্রই চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ালো তখন আমি বললাম কখন এলি তখন সে মৃদু কণ্ঠে বললো অনেকক্ষণ হলো।বললাম ভাবি চা নাস্তা দিলো খেলে না যে।সে বললো মন চাইছে না কিছু খেতে তাই।আমি আর কথা না বাড়িয়ে তার হাত ধরে চা এর টেবিলে নিয়ে বসালাম আমি ও তার পাশে খালি চেয়ার টিতে বসলাম ।বললাম কিছু একটা মুখে দাও।সে বললো তুই খেয়ে নে আমি আছি। আমি আর বেশি বাড়াবাড়ি না করে চা টা মুখে দিলাম আমি জানি প্রতি একুশ এলে স্বজন হারানোর বিষাদ বেদনায় ব্যাকুল হয়ে পড়ে। প্রতিটি একুশ তার কাছে যেন বিষাদের ছায়া। তাকে দেখে মনে হলো সে এখন আর রেগে নেই এই ফাঁকে বললাম তুই অযথা আমার উপর রেগে আছিস আমি জানি কাল একুশে ফ্রেবুয়ারী তুই শহীদ মিনারে যাবি তাই তোর ফুল দরকার আমি তোর জন্য ফুল খুজছি কিন্তু কাছাকাছি না পেয়ে অনেক দুরে গিয়ে তোর ফুলের বায়না দিয়ে এলাম।এই শুনে অধরা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো আমি এই জন্য তোকে বার বার ফোন দিচ্ছিলাম কিন্তু তুই ফোন ধরছিস না আর কদিন হলো আমার সাথে দেখা দিচ্ছিস না তাই তোর প্রতি আমার রাগ অভিমান।তখন বললাম এখন তোর ভুল ভেঙ্গেছে কি তখন সে একটি কষ্টের হাসি দিয়ে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করলো আর আমার হাত কে তার দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো এই জন্যে তোকে আমার এত ভালো লাগে।তার পর বললাম রাত অনেক হলো এখানে থেকে যা কাল যখন একুশে ফ্রেবুয়ারী ভোরে প্রভাত ফেরির মাধ্যমে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজের বুকের ভিতর জমানো ব্যথাটা হালকা করিস।পরের দিন ভোরে অধরা কে নিয়ে আমিও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে অধরা তার বাসায় চলে গেলো আমি আরো কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রহিলাম তার পথের দিকে ছেয়ে ।