রবিবার, ০৪ Jun ২০২৩, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জয়পুরহাটে চিত্রাংকন, গ্রন্থপাঠ ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিকেলে জেলা পুলিশের আয়োজনে পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে চিত্রাংকন, গ্রন্থপাঠ ও কুইজ প্রতিযোগিতা করা হয়।
চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় জেলার পুলিশ সদস্যদের ২৮ জন সন্তান-সন্ততিরা অংশগ্রহণ করেন। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ক-গ্রুপ করে ‘মুক্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বিষয় এবং ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের খ-গ্রুপ করে ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা’ বিষয়ে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা আয়োজন হয়। এতে ক-গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করেন জেলার রিজার্ভ অফিসে কর্মরত এএসআই (নিঃ) আব্দুল আলিমের মেয়ে মারিয়া আফরিন মেঘা, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন মটরযান শাখায় কর্মরত কনস্টেবলমেহরাব হাসানের ছেলে সোয়াইব হাসান, তৃতীয় স্থান অধিকার করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) তরিকুল ইসলামের মেয়ে মারদিয়া ইসলাম (তুবা)। আর খ-গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করেন জেলার সদর ট্রাফিকে কর্মরত এটিএসআই নায়েব আলীর মেয়ে নুসরাত জাহান নৈতিক, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ডিবি পুলিশের ওসি শাহেদ আল মামুনের মেয়ে নাফিসা শাহেদ, তৃতীয় স্থান অধিকার করেন জয়পুরহাট থানার সদর ফাঁড়ীর ইনচার্জ মিলাদুন নবীর মেয়ে মুশফিকা জান্নাত মাহী।
গ্রন্থপাঠ প্রতিযোগিতায় শহীদ পুলিশ সুপার নজমুল হক পুলিশ লাইন্স হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক-গ্রুপ করে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বিষয় এবং নবম থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের খ-গ্রুপ করে ‘কারাগারের রোজনামচা’ বিষয়ে গ্রন্থপাঠ প্রতিযোগিতা আয়োজন হয়। এতে ক-গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করেন ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মাশরাফি, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ৮ম শ্রেণির ছাত্র শিবলী সাদিক, তৃতীয় স্থান অধিকার করেন ৭ম শ্রেণির ছাত্র আরিফ ফয়সাল। আর খ-গ্রুপ প্রথম স্থান অধিকার করেন ৯ম শ্রেণির ছাত্রী অর্পিতা সরকার, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন ১০ম শ্রেণির ছাত্রী জুই ফেরদাউস, তৃতীয় স্থান অধিকার করেন ১০ম শ্রেণির ছাত্রী রাফিয়া আক্তার।
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা এর উদ্দ্যোগে “গৌরবময় স্বাধীনতা” নামে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার তৈরী করা হয়। এই মুক্তিযুদ্ধ কর্নার এর উপর জেলায় কর্মরত সকল পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ২২জন পুলিশ সদস্যদের অংশগ্রহণে কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজন হয়। কুইজ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন কনস্টেবল হাবিবুর রহমান, তৃতীয় স্থান অধিকার করেন কনস্টেবল সুজন আলী। তারা সবাই পুলিশ লাইন্সে কর্মরত আছে।
এসময় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা (পিপিএম-সেবা)।
তিনি বক্তব্যের প্রারম্ভে বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী আদর্শ ও অমর কর্মের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। পাশাপাশি ১৫ আগস্ট শাহাদত বরণকারী সকল শহীদদের প্রতি অতল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তকারীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিবর্জিত সাম্প্রদায়িক ও অতি প্রতিক্রিয়াশীল ‘বাংলাস্তান’ গড়তে চেয়েছিল। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তাঁর রেখে যাওয়া অবিনাশী আদর্শ ও অক্ষয় চেতনাকে বিনাশ করা সম্ভব নয়। কারণ বঙ্গবন্ধু কোন একজন ব্যক্তি নয়, তিনি এক অবিনাশী আদর্শ, একটি মুক্তির আন্দোলন, দীর্ঘ অপশাসনের হাত থেকে বাঙালি জাতির মুক্তির প্রধান স্থপতি। তিনি ফিনিক্স পাখির মত অনির্বাণ শিখা, যে আদর্শের শিখা কোটি কোটি বাঙালির হৃদয়ে আজীবন জ্বলবে। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি জাতি থাকবে, থাকবে পদ্মা মেঘনা যমুনা বহমান, ততদিন বঙ্গবন্ধুর এই অম্লান কীর্তি ও অবিনাশী চেতনাকে কেউ মুছে দিতে পারবেনা।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক সুখী ও সমৃদ্ধ “সোনার বাংলাদেশ” গড়ে তোলার জন্য প্রত্যেককে সোনার মানুষ হওয়ার জন্য আহ্বান জানান। সেইসাথে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিতে সহায়তার আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে প্রেরণার উৎস মর্মে উল্লেখ করেন। বিনম্র শ্রদ্ধা, হে পিতা!
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) তরিকুল ইসলাম, ফারজানা হোসেন, জেলা ডিবি পুলিশের ওসি সাহেদ আল মামুনসহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পদবীর পুলিশ সদস্যগণ।
ইন্দোবাংলা/এম. আর