শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১১ পূর্বাহ্ন

সরকারি জরুরি হটলাইন

সরকারি তথ্য ও সেবা-৩৩৩, জরুরি সেবা-৯৯৯, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে-১০৯, দুদক-১০৬, দুর্যোগের আগাম বার্তা-১০৯০, শিশুর সহায়তায় ফোন-১০৯৮, ভূমির সেবা পেতে...অভিযোগ জানাতে-১৬১২২, ই-জিপি জরুরি হেল্পলাইন-১৬৫৭৫, নৌপরিবহনের হেল্পলাইন-১৬১১৩। তথ্য সুত্র : পিআইডি

শিরোনাম
মানুষ এখন শখ করে পান্তা ভাত খায় : খাদ্যমন্ত্রী ‘স্মার্ট বাংলাদেশের অংশীদার হই, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং ও মাদকমুক্ত রই’ জয়পুরহাটে সমবায়ীদের তোপের মুখে যুগ্মনিবন্ধক ডিএমপি কমিশনার হলেন অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবায় বৈশ্বিক সহায়তা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী সার্বিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা ‘হু’ প্রধানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন কাউন্সিলর ডেরেক শোলের সাক্ষাৎ বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ কেবল শেখ হাসিনার দ্বারাই সম্ভব : সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী অর্থ আত্নসাৎ, দুই বছর বেতন বাড়বে না সমাজসেবা কর্মকর্তার

জাতীয় সংবিধান দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ৪ নভেম্বর ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“আগামীকাল ৪ নভেম্বর । জাতীয় সংবিধান দিবস। এ উপলক্ষ্যে আমি দেশের সকল নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
আজ বাঙালি জাতির এক ঐতিহাসিক দিন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র ১১ মাসের মধ্যে এদিনে গৃহীত হয়েছিল বাঙালি জাতির অধিকারের দলিল, বহুল আকাঙ্ক্ষিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান।

আওয়ামী লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করে। এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের মোট ৩১৩ আসনের পূর্ব-পাকিস্তানের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টিতে এবং প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মোট ৩১০ আসনের মধ্যে ২৯৮টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীগণকে নির্বাচিত করে। কিন্তু তদানীন্তন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা আওয়ামী লীগের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ না করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতা ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন- ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ কালরাতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা টেলিগ্রাম, টেলিপ্রিন্টার ও তৎকালীন ইপিআর- এর ওয়ারলেসের মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এই ঘোষণা প্রচারিত হয়। স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল Proclamation of Independence, 1971 ঘোষণা করা হয়; যা অন্তর্বর্তীকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম সংবিধান হিসেবে বিবেচিত। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে মন্ত্রী করে গঠিত বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে। শুরু হয় দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন এবং ১১ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে Provisional Constitution of Bangladesh Order, 1972 জারি করেন; যা দ্বিতীয় সংবিধান নামে খ্যাত।

একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বয়ংসম্পূর্ণ সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ Constituent Assembly of Bangladesh Order, 1972 জারি করা হয়। উক্ত আদেশের অধীন ১৯৭০ সালের পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদের সদস্য এবং প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের নিয়ে গণপরিষদ গঠিত হয়। গণপরিষদকে সংবিধান প্রণয়নের দায়িত্ব অর্পণ করা হয় ।

১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল গণপরিষদের ১ম অধিবেশনে ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে খসড়া সংবিধান বিল আকারে গণপরিষদে উত্থাপন করা হয়। ৪ নভেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান গণপরিষদে গৃহীত হয়। গণপরিষদে সংবিধানের ওপর বক্তব্য প্রদানকালে জাতির পিতা বলেন, “জনাব স্পিকার সাহেব, আজই প্রথম সাড়ে সাত কোটি বাঙালি তাদের শাসনতন্ত্র পেতে যাচ্ছে। বাংলার ইতিহাসে বোধ হয় এই প্রথম যে, বাঙালিরা তাদের নিজেদের শাসনতন্ত্র দিচ্ছেন। বোধ হয় না, সত্যিই এটা প্রথম যে, বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিরা জনগণের ভোটের মারফতে এসে তাঁদের দেশের জন্য শাসনতন্ত্র দিচ্ছেন”। তিনি আরো বলেন, “এই শাসনতন্ত্রের জন্য কত সংগ্রাম হয়েছে এই দেশে। আজকে, আমার দল যে ওয়াদা করেছিল, তার এক অংশ পালিত হল। এটা জনতার শাসনতন্ত্র। যে কোন ভাল জিনিস না দেখলে, না গ্রহণ করলে, না ব্যবহার করলে হয় না, তার ফল বোঝা যায় না। ভবিষ্যৎ বংশধররা যদি সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এবং ধর্ম নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন, তাহলে আমার জীবন সার্থক হবে, শহিদের রক্তদান সার্থক হবে”।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত স্বপ্ন ছিল একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার; যেখানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত হবে। বঙ্গবন্ধুর এই লালিত স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদানের জন্যই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় ঘোষণা করা হয় যে, রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন একটি শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হবে।

স্বাধীনতার পর গত ৫১ বছরে আমাদের যা কিছু অর্জন তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং আওয়ামী লীগের হাত ধরেই অর্জিত হয়েছে। মাত্র সাড়ে ৩ বছরে জাতির পিতা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করেন। বঙ্গবন্ধুর আমলে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ অতিক্রম করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন করে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। আমরা জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করছি। গত পৌনে ১৪ বছরে আমরা দেশের প্রতিটি খাতে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করেছি। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মর্যাদাশীল উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ অর্জন করেছে। এটা আমাদের জন্য এক বিশাল অর্জন। আমি আশা করি, আমাদের উন্নয়নের এই গতিধারা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যেই জাতির পিতার ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সুদূরপ্রসারী এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অতি অল্প সময়ের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন বাঙালির জাতীয় জীবনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সংবিধান প্রণয়নের সুবর্ণজয়ন্তীতে ৪ নভেম্বরকে ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ হিসেবে ঘোষণা আওয়ামী লীগ সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আমাদের মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাস ও সংবিধানের চেতনা ধারণের জন্য জাতীয় সংবিধান দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

আমি ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”

ইন্দোবাংলা/এম. আর

সংবাদ শেয়ার করুন

সতর্ক বার্তা

আমরা নিজস্ব সংবাদ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি। -ইন্দোবাংলা টীম।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৩১ নির্দেশনা

© ইন্দোবাংলা২৪.কম সকল অধিকার সংরক্ষিত ২০২৩।
কারিগরি সহায়তায়: অল আইটি