বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০২ অপরাহ্ন
যমুনা নিউজ বিডিঃ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের আজকের সভায় দলের জাতীয় সম্মেলনসহ একাধিক সিদ্ধান্ত হতে পারে। বিকাল সাড়ে ৫টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। সাড়ে পাঁচ মাস পর এ সভার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা সবাই দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাচ্ছেন। সর্বশেষ গত বছর ১৯ নভেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। বহিষ্কারের পর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের পদটিও হারান জাহাঙ্গীর আলম। ওই সভাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও করোনাভাইরাসের কারণে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সব নেতাকে গণভবনে ডাকা হয়নি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বলেছেন, ‘চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর এ (বর্তমান) কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। আওয়ামী লীগের রীতি অনুযায়ী ডিসেম্বরে নতুন সম্মেলন হবে।’ তাই জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে দলটির এ সভাকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন নেতারা। এ সভায় আসন্ন জাতীয় সম্মেলন ছাড়াও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মাঠ পর্যায়ের প্রস্তুতি, দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীসহ কয়েকটি দিবসের কর্মসূচি ও সমসাময়িক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনাসহ সাংগঠনিক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে কেন্দ্রীয় নেতারা যুগান্তরকে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, সভায় অংশগ্রহণের জন্য শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে নেতাদের করোনা টেস্ট করানো হয়েছে। যাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে, তারাই কেবল আজকের সভায় অংশ নিতে পারবেন। আওয়ামী লীগের আজকের সভায় ১২টি এজেন্ডা (আলোচ্যসূচি) রয়েছে। এগুলো হলো-শোক প্রস্তাব পাঠ, ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, ২৫ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী, ৭ জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস, ১১ জুন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস, ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, ৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, সমসাময়িক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়, সাংগঠনিক এবং বিবিধ।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা যুগান্তরকে বলেছেন, প্রতিকূল করোনাভাইরাস সফলভাবে মোকাবিলা করে দেশের মানুষ দুই বছর পর মহাসমারোহে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করলেন। এর ফলে সারা দেশে একটা স্বস্তিদায়ক পরিবেশ ফিরে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে আজ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সর্বশেষ গত বছর ১৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ৫০ নেতাকে ডাকা হয়েছিল। বড় পরিসরে এই প্রথম কার্যনির্বাহী সংসদের সভা হচ্ছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দলের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীসহ নানা কারণে এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নেতারা ধারণা করছেন, ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা ধরে এই সভা চলতে পারে। এতে দলের আসন্ন সম্মেলনের তারিখ নিয়ে আলোচনা হবে। আওয়ামী লীগের জেলা ও উপজেলা কমিটির সম্মেলনের সর্বশেষ অগ্রগতি বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকেরা। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারিতে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের তাগিদ দিয়েছিলেন। তিনি আজকের সভায় আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি এবং যেসব জেলায় দলীয় কোন্দল বা অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে, সেগুলো সমাধানের কথা বলবেন। এছাড়াও নেতাদের জন্য রয়েছে নৈশভোজ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক যুগান্তরকে বলেন, আমাদের দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা অতি দ্রুত ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা শাখাগুলোর সম্মেলন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এগুলো তো আমাদের দলের সম্মেলনের সিমটম। সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কালকের (শনিবার) সভায় সাংগঠনিক এবং সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। জাতীয় সম্মেলন সামনে তাই সে বিষয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান।
দলটির আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক যুগান্তরকে বলেন, ‘সর্বশেষ নভেম্বর মাসে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস কেটে গেছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তাই কমিটির সবাই আমরা একসঙ্গে মিলিত হতে পারছি।
সে কারণে নেতারা সাংগঠনিক বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চাইবেন। আমরা সাংগঠনিক সম্পাদকরা সভানেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী তৃণমূলে আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজনের কাজ করছি। এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।’